Bivash Vlog

Find Your Dream Jobs

দীনবন্ধ মিত্র (১৮৩০-১৮৭৩)

দীনবন্ধু মিত্র (১৮৩০-১৮৭৩) । Dinabandhu Mitra নাট্যকার দীনবন্ধু মিত্র, নাট্যসাহিত্যে দীনবন্ধু মিত্রের অবদান, দীনবন্ধু মিত্র ও ‘নীলদর্পণ’

hira মিত্র ১৮৩০ সালে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার চৌবেড়িয়া গ্রামে এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতৃপ্রদত্ত নাম ‘গন্ধর্ব নারায়ণ। পরিবর্তন করে নিজে নাম রাখেন দ্বীনবন্ধু। উপাধি ‘রায় বাহাদুর’। তিনি নাট্যকাররূপেই সমধিক খ্যাত। পিতার নাম কালাচাদ মিত্র।

0 গ্রাম্য পাঠশালায় পাঠ শেষে পিতার ইচ্ছায় স্থানীয় জমিদারের সেরেস্তায় চাকুরী নেন। কিন্তু তিনি পিতাকে না জানিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য কলকাতা চলে আসেন। সেখানে পিতৃব্য নীলমণি মিরের বাসায় থাকতেন।

o কলকাতায় পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতে গৃহভৃত্যের কাজ করতেন।

o কলেজের শেষ পরীক্ষা সমাপ্তির আগেই পোষ্ট মাস্টার পদে নিয়োগ (১৮৫৫) লাভ করেন। চাকুরীর সুবাদে নদীয়া ও ঢাকা বিভাগে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। লুসাই যুদ্ধের (১৮৭১) সময় তিনি কাছাড়ে প্রেরিত হন। এ সময় তার তদারকি কর্মে সন্তুষ্ট হয়ে সরকার তাকে রায় বাহাদুর’ উপাধি দেন। পরবর্তীতে ১৮৭২ সালে তিনি ইন্ডিয়ান রেলওয়ের ইন্সপেক্টর পদ লাভ করেন।

o তার সাহিত্য জীবন শুরু কবিতা দিয়ে ।।

0 ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের অনুপ্রেরণায় কবিতা লিখে ‘সংবাদ প্রভাকর’ ও ‘সংবাদ সাধুরঞ্জন’ পত্রিকায় প্রকাশ করেন।

০১ নভেম্বর ১৮৭৩ সালে মারা যান।

সাহিত্যকর্ম

o নাটক

নীলদর্পণ (১৮৬০) বাংলাদেশের মেহেরপুর অঞ্চলের নীলচাষীদের দুরবস্থা অবলম্বনে রচিত। এ নাটক প্রথম প্রকাশের সময় দীনবন্ধুর নাম ছিল না। নীলকর- বিষধর-দংশন-কাতর প্রজানিকর-ক্ষেমন্তরেণ-কেনচিৎ-পথিকেনাতি প্রণীতম’ ছদ্মনামে রচনা করেন।

এ নাটক মাইকেল মধুসূধন দত্ত A Native ছদ্মনামে Nil Durpan, or The Indigo Planting Mirror শিরোনামে অনুবাদ করেন। উল্লেখ্য এটিই প্রথম বাংলা নাটক যা ইংরেজিতে অনূদিত হয়। এ অনুবাদ প্রকাশিত হলে বাঙালি মহলে যতটা প্রশংসিত, শেতাঙ্গমহলে ঠিক ততটাই ঘূর্ণিত হয়েছিল।

এ অনুবাদ প্রকাশ করার জন্য পাদ্রি বেভারেন্ড জেমস লঙকে এক হাজার টাকা জারিমানা করা হয়। এ জরিমানার টাকা কালীপ্রসন্ন সিংহ আদালতেই দিয়ে দেন। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এ নাটকের অভিনয় দেখে অভিনেতাকে জুতো ছুড়ে মারেন। শক্তিমান সেই অভিনেতা অর্ধেন্দুশেখর মুস্তাফিও

অভিনয়ের সম্মান হিসেবে সেই জুতাকে তুলে নিয়েছিলেন যত্ন করে। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় পরবর্তীকালে এ নাটকের সঙ্গে স্টো-এর আঙ্কল টমস কেবিন গ্রন্থের তুলনা করেন।

ঢাকা থেকে প্রকাশিত প্রথম নাটক ‘নীলদর্পণ । এটি ঢাকার প্রথম প্রেস ‘বাংলা প্রেস’ থেকে ছাপা হয়। এ নাটকটির ঘটনা, রচনা, মুদ্রণ, প্রকাশ ও প্রথম মঞ্চায়ন সবই বাংলাদেশে, তাই একে ‘বাংলাদেশের নাটক’ বলা হয়।

• নবীন তপস্বিনী (১৮৬৩) • লীলাবতী (১৮৬৭)

• জামাই বারিক (১৮৭২)

• কমলে কামিনী (১৮৭৩)

0 প্রহসন-

• সধবার একাদশী (১৮৬৬)

• বিয়ে পাগলা বুড়ো (১৮৬৬)।

o কাব্য

• সুরধুনী কাব্য (১ম ভাগ-১৮৭১, ছয় ভাগ – ১৮৭৬)। হিমালয় থেকে গঙ্গাদেবীর সাগরসঙ্গমে যাত্রার ছন্দোবদ্ধ বর্ণনা।

দ্বাদশ কবিতা (১৮৭২)

গ্রন্থপরিচিতি

নীলদর্পণ :- দ্বীনবন্ধু মিত্রের প্রথম ও শ্রেষ্ঠ নাটক ‘নীলদর্পন’ (১৮৬০)। এ নাটকে স্থানবন্ধু মিত্র বাংলার কৃষকদের উপর ব্রিটিশ নীলকরদের নিষ্ঠুর অত্যাচারের স্বরূপ ফুটিয়ে তুলেছেন।

দীনবন্ধু মিত্র ঢাকা জেলার পোস্টাল বিভাগের ইন্সপেক্টিং পোস্ট মাস্টার হিসেবে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন জেলায় ঘুরে বেড়ানোর সময় গ্রামীণ কৃষকের উপর নীলকরদের অত্যাচার দেখেন এবং লিখেন নাটক নীলদর্পন।

কীভাবে সম্পন্ন কৃষক গোলক মাধবের পরিবার নীলকদের অত্যাচারে ধ্বংস হয়ে গেল এবং সাধুচরণের কন্যা ক্ষেত্রমণির মৃত্যু হ তার এক মর্মস্পর্শী চিত্র ফুটে উঠেছে এই নাটকে। তোরাপ চরিত্রটি এই নাটকের অত্যন্ত শক্তিশালী এক চরিত্র।

এর মধ্যে দিয়েই শ্বেতাঙ্গ নীলকরদের বর্বর চরিত্র উদ্ঘাটিত হয়। নীলদর্পন নাটকের ইংরেজি অনুবাদ ইংল্যান্ডের পার্লামেন্টে প্রেরিত হয়। স্বদেশে ও বিদেশে নীলকরদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। ফলে সরকার ইন্ডিগো কমিশন বা নীল কমিশন গঠন করতে বাধ্য হন। আইন করে নীলকরদের বর্বরতা বন্ধের ব্যবস্থা করা হয়।

সধবার একাদশী:- ধীনবন্ধু মিত্রের প্রহসন ‘সধবার একাদশী’ (১৮৬৬) বাংলা সাহিত্যের একটি উৎকৃষ্ট নিদর্শন। আলোচা এ প্রহসনে ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে সুরা পান এবং বেশ্যাবৃত্তি যুবকদের জীবনে যে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছিল সেই কাহিনি বর্ণিত হয়েছে।

বিশেষ করে ইয়ং বেঙ্গল সমাজের অধঃপতনের বাস্তব চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। এটি একটি প্রহসন নাটক। এটি নাতিদীর্ঘ। এতে তিনটি অভ রয়েছে। প্রথম অঙ্কে ২টি, দ্বিতীয় অঙ্কে ৪টি এবং তৃতীয় অঙ্গে এটি গর্ভাঙ্কে রয়েছে।

এ নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র অটল ধনাঢ্য ব্যক্তির সন্তান। তার অন্তরঙ্গ বন্ধুদের প্ররোচনায় সে মনে আসক্ত হয় এবং বেশ্যালয়ে গমন শুরু করে। কাঞ্চন নামের এক বেশ্যাকে স্বগৃহে রক্ষিতা হিসেবে রাখতে উদ্যত হলে পিতা আপত্তি করেন।

কিন্তু মা পুত্র হারানোর ভয়ে রক্ষিতার ব্যাপারে সম্মতি জ্ঞাপন করে। অটলের বন্ধু-বান্ধব বিশেষ করে নিমচাদ এসব কর্মকান্ডে তাকে সাহায্য করে। এক পর্যায়ে কাঞ্চন অটনকে পরিত্যাগ করে। অটলের বন্ধুরা মানুষের হাতে নিগৃহীত হয়।

ইন্দিরা (১৮৭৩)

আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে কিন্তু ততদিনে অপেক্ষায় জর্জরিত ও অসুস্থ ভ্রমরের জীবনাবসান ঘটেছে। গোবিন্দলাল সন্ন্যাস গ্রহণ করে।