
জসীমউদ্দীন (১৯০৩-১৯৭৬) (Jasimuddin) জসীমউদ্দীন এর ছদ্মনাম, জসীমউদ্দীন এর কাব্যগ্রন্থ, কবি জসিম উদ্দিন এর উক্তি, জসিম উদ্দিন এর প্রথম কাব্যগ্রন্থ, জসিম উদ্দিনকে পল্লী কবি বলা হয় কেন? কবি জসিম উদ্দিনের বিখ্যাত কবিতা কোনটি? কবি জসিম উদ্দিনের ছেলে মেয়ে।
পল্লিকবি জসীমউদ্দীন ১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি ফরিদপুরের তাম্বুলখানা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পৈতৃক নিবাস কুমার নদীর তীরে ফরিদপুরের গোবিন্দপুর (বর্তমান আম্বিকাপুর ) গ্রাম। পুরোনাম জসীম উদ্দীন মোল্লা। পিতা আনসারউদ্দীন মোল্লা।
o ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে মেট্রিক (১৯২১), রাজেন্দ্র কলেজ থেকে আই.এ. (১৯২৩) ও বি.এ. (১৯২৯) পাশ করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম.এ. (১৯৩১) ডিগ্রি লাভ করেন।
o এম. এ. শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে ড. দীনেশচন্দ্র সেনের আনুকূল্যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পল্লিগীতি সংগ্রাহক পদে নিয়োগ লাভ করেন।
০ ১৯৩১-৩৭ পর্যন্ত ড. দীনেশচন্দ্র সেনের অধীনে রামতনু লাহিড়ী গবেষণা সহকারী পদে কর্মরত ছিলেন।
o ১৯৩৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত এ পদে বহাল ছিলেন।
o ১৯৪৪ সালে বঙ্গীয় প্রাদেশিক সরকারের পাবলিসিটি বিভাগের অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হন। দেশ বিভাগের পর পূর্ব পাকিস্তান সরকারের প্রচার বিভাগের Additional Song publicity Organizer পদে যোগদান করেন। ১৯৬২ সালে প্রচার বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
o প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন। ষাটের দশকের শেষের দিকে পাকিস্তান সরকার রেডিও ও টেলিভিশনে রবীন্দ্রসংগীত বন্ধের পদক্ষেপ নিলে তিনি তীব্র বিরোধীতা করেন।
o ১৯৭৬ সালের ১৩ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর অন্তিম ইচ্ছানুসারে ১৪ মার্চ) ফরিদপুরের আধিকাপুরে দাদীর কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
সাহিত্যকর্ম
• ১৯২১ সালে মোসলেম ভারত পত্রিকায় ‘মিলন গান‘ কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটি তাঁর প্রথম প্রকাশিত কবিতা।
• রাখালী (১৯২৭) প্রথম কাব্য গ্রন্থ।
• নক্সী কাঁথার মাঠ (১৯২৯) তাঁর শ্রেষ্ঠ রচনা। এর প্রধান চরিত্র রূপাই ও সাজু। E.M. Millford গ্রন্থটি Field of the Embroidery Quilt শিরোনামে অনুবাদ করেন।
• বালুচর (১৯৩০)
• ধানক্ষেত্র (১৯৩৩)
• সোজন বাদিয়ার ঘাট (১৯৩৪)। এ কাব্যের প্রধান চরিত্র সোজন ও দুল । এ কাহিনিকাব্যটি ইউনেস্কোর উদ্যোগে Gypsy Wharf (1969) শিরোনামে অনূদিত হয়।
• পবর্তী (১৯৪৬)
• মাটির কান্না (১৯৫৮)
• সুচয়নী (১৯৬১, নির্বাচিত কবিতা সংকলন),
• মা যে জননী কান্দে (১৯৬৩)।
বিখ্যাত কবিতা-
• ‘কবর‘। বি.এ. ক্লাসে অধ্যয়নকালে রচনা করেন। ১১৮ লাইনের কবিতাটি মাত্রাবৃত্ত ছন্দে লেখা। কবিতাটি ‘রাখালী‘ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। করোল পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তাঁর ছাত্রাবস্থায়ই এ কবিতাটি মাধ্যমিক পর্যায়ে পাঠ্য করা হয়েছিল।
• আসমানী। এ কবিতাটি কবির এক পয়সার বাঁশি কাব্যগ্রন্থের অর্ন্তভূক্ত। আসমানী একটি বাস্তব চরিত্র। জসীম উদ্দীনের ভাই সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যাপক নুরুদ্দিন আহমেদের শ্বশুর বাড়ি ছিল আজকের ফরিদপুর সদরের ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে। সেখানে বেড়াতে গিয়ে কবি আসমানীর দেখা পান এবং সেখানে বসেই ‘আসমানী‘ কবিতা রচনা করেন। ২০১২ সালের ১৮ আগস্ট ৯৭ বছর বয়সে আসমানী মারা যায়।
উপন্যাস–
• বোবা কাহিনী (১৯৬৪)। ফরিদপুরের একটি বিশেষ অঞ্চলের জীবনচিত্র এ উপন্যাসের উপজীব্য। উপন্যাসের নায়ক আজাদের এক ছিন চাষীসন্তান। বাল্যকাল থেকে লাঞ্ছনা বঞ্চনা তার নিত্যসঙ্গী। তবুও সে স্বপ্ন দেখে সুখী জীবনের কিন্তু নানা প্রতিকূলতায় তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয় না।
• বউটুবানির ফুল (১৯৯০)
• বাঙালির হাসির গল্প। এ গ্রন্থটি ইউনেস্কোর উদ্যোগে Folk Tales of Bangladesh নামে অনূদিত হয়।
• পদ্মাপাড় (১৯৫০)
• বেদের মেয়ে (১৯৫১)
• মধুমালা (১৯৫১) • পল্লীবধূ (১৯৫৬)
• গ্রামের মায়া (১৯৫৯)।
o শিশুতোষ গ্রন্থ
• হাসু (১৯৩৮)
• এক পয়সার বাঁশি (১৩৫৬)
• ডালিমকুমার (১৯৫১)
o ভ্রমণকাহিনি
• চলে মুসাফির (১৯৫২)
• হলদে পরীর দেশে (১৯৬৭, এর জন্য ইউনেস্কো পুরস্কার লাভ ) * যে দেশে মানুষ বড় (১৯৬৮)
• জার্মানির শহরে ও বন্দরে (১৯৭৬)
o স্মৃতিকথা
• যাদের দেখেছি (১৯৫২)
• ঠাকুর বাড়ির আঙিনায় (১৯৬১)
• জীবন কথা (১৯৬৪)
• স্মৃতিপট (১৯৬৮)।
0 গানের সংকলন
• রঙ্গিলা নায়ের মাঝি (১৯৩৫)
• গাঙ্গের পাড় (1968)
• জারিগান (১৯৬৮)
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সম্মানসূচক ডি.লিট ডিগ্রি (১৯৬৯) লাভ।
• একুশে পদক লাভ (১৯৭৬) করেন।
জেনে রাখা ভাল
o ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ তাঁর জামাতা।
গ্রন্থপরিচিতি
নক্সীকাঁথার মাঠ – জসীমউদদীনের অমর সৃষ্টি ‘নক্সীকাঁথার মাঠ‘। নক্সী কাথার মাঠ কাব্যোপন্যাসটি রূপাই ও সাজু নামক দুই গ্রামীণ যুবক-যুবতির অবিনশ্বর প্রেম কাহিনি।
নক্সী কাথার মাঠ-এর নায়ক রূপাই গাঁয়ের ছেলে, কৃষ্ণকায়, কাঁধ পর্যন্ত চুল এবং প্রসিক লাঠিয়াল। রুপাইর সঙ্গে সাজুর ভালবাসা হয় এবং পরে বিয়ে করে সংসার শুরু করে। কিছুদিন পর বনগেঁয়োদের সাথে লড়াই করে খুনের আসামী হয়ে ফেরারী হয়।
সাজু রূপাইয়ের অপেক্ষায় থেকে সমস্ত অতীত স্মৃতি সুই-সুতা দিয়ে কাঁথার ওপর ফুটিয়ে তুলতে থাকে। কাঁথা বোনা শেষ হলে সেটা মায়ের হাতে তুলে দিয়ে বলে আমার কবরের উপর এ কাঁথাটা বিছিয়ে দিও আর রূপাই যদি কোন দিন আমার খোঁজে আসে তাকে বিলো আমি তার আশায় কবরের নিচে আছি। বহুদিন পর গাঁয়ের কৃষকরা গভীর রাতে বেদনার্ত এক বাশীর সুর শুনতে পায়, আর ভোর দেখে সাজুর কবরের পাশে এক ভিনদেশি লোক মরে পড়ে আছে।
এ কাব্যগ্রন্থের কপাই চরিত্রটি বাস্তবের এক ব্যক্তিকে উপজীব্য করে নেওয়া। যার প্রকৃত নাম রূপা। তার বাড়ি ময়মনসিংয়ের গফরগাঁও উপজেলার শিলাসী গ্রামে। ১৯২৮ সালের শেষ দিকে ময়মনসিংহ গীতিকা সংগ্রহ করতে জসীমউদদীন গফরগাওয়ে এসেছিলেন। সেখানেই রূপার সাথে পরিচয়।
FAQ : জসীমউদ্দীনকে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সমূহ
উত্তরঃ এক পয়সার বাঁশি
উত্তরঃজসীমউদ্দীন
উত্তরঃ কাব্য
উত্তরঃ জসীমউদ্দীন
উত্তরঃ নকশীকাঁথার মাঠ
উত্তরঃ ১৯০৩-১৯৭৬ইং
উত্তরঃজসীমউদ্দীন
উত্তরঃ কল্লোল
উত্তরঃউপন্যাস
উত্তরঃ কলেজে পড়েন
উত্তরঃজসীমউদ্দীন
উত্তরঃ নকশীকাঁথার মাঠ
উত্তরঃ মাত্রাবৃত্ত
উত্তরঃ ফরিদপুরে
উত্তরঃ জসীমউদ্দীন
উত্তরঃ বোবা কাহিনী
উত্তরঃ ১৯২৭
উত্তরঃ ১৯৩৮
উত্তরঃ জসীমউদ্দীন
উত্তরঃ কাজল গাঁয়ে
উত্তরঃ জসীম উদ্দীন
উত্তরঃ রাখালী
উত্তরঃ জসীমউদ্দীন
উত্তরঃ সোজন বাদিয়ার ঘাট
উত্তরঃ রাখালী
উত্তরঃ রাখালী
উত্তরঃ বোবা কাহিনী
উত্তরঃ সকিনা
উত্তরঃ তরমুজ
উত্তরঃ রাখালী
উত্তরঃ রাখালী
উত্তরঃ জসীমউদ্দীন
উত্তরঃ কবি জসীম উদ্দীন
উত্তরঃজসীমউদ্দীন
উত্তরঃ জসীমউদ্দীন
উত্তরঃ প্রিয়জন হারানোর মর্মান্তিক স্মৃতিচারণ
উত্তরঃ জসীমউদ্দীন
উত্তরঃ ১১৮টি
উত্তরঃ ১৩ মার্চ
উত্তরঃ ১৯৬৯
উত্তরঃ রাখালী
উত্তরঃ জসীম উদ্দীন
উত্তরঃ ঢাকায়
উত্তরঃ ফরিদপুর
উত্তরঃ বেদের মেয়ে
প্রশ্নঃ জসিম উদ্দিন কি হিসেবে সমধিক পরিচিত?
উত্তরঃ জসীম উদ্দীন (১ জানুয়ারি ১৯০৩ – ১৩ মার্চ ১৯৭৬) একজন বাঙালি কবি, গীতিকার, ঔপন্যাসিক ও লেখক। ‘পল্লীকবি’ উপাধিতে ভূষিত, জসীম উদ্দীন আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে লালিত প্রথম পূর্ণাঙ্গ আধুনিক কবি।
উত্তরঃ ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর রেলষ্টশনের উত্তরে কুমার নদীর দক্ষিণে গোবিন্দপুর গ্রামে পল্লী কবি জসীম উদ্দীনের বাড়ি। বাড়িতে চারটি পুরাতন টিনের চালা ঘর রয়েছে। কবির ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত ঘরগুলোতে সংরক্ষিত রয়েছে। কবির বিভিন্ন লেখা বাড়ীর চত্ত্বরে প্রদর্শন করা আছে।
উত্তরঃ তার প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ হলো ‘রাখালী’ (১৯২৭) । তার প্রকাশিত অন্যান্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে – নকশী কাঁথার মাঠ (১৯২৯) , বালুচর (১৯৩০) , ধানক্ষেত (১৯৩১) , সোজনবাদিয়ার ঘাট (১৯৩৩) ,হাসু (১৯৩৮) , মা যে জননী কান্দে (১৯৬৩) ইত্যাদি।